রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
যানবাহনের অতিরিক্ত ওজনের (ওভারলোড) কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে সড়কের আয়ুষ্কাল। দেশের সড়কের এমন পরিণতি ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)।
‘সওজ আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী এবং
একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগর এনইসিতে অনুষ্ঠিত
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পসহ আরও ৯
প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, একনেক সভায় মোট ১০টি
প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১০টি প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা
হয়েছে ৬ হাজার ৩শ ২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯শ ৯৯ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য,
বাকি অর্থ সরকারি খাত থেকে সংস্থান করা হবে।
এক্সেল লোড স্থাপন প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬শ ৩০
কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা
হবে। প্রকল্পের আওতায় ৯০ সেটওয়ে ইন মোশন স্কেল, ৩১ সেট স্ট্যাটিকওয়ে ব্রিজ
স্কেল স্থাপন ও কমিশনিং করা হবে।
স্থানগুলো হলো- গাজীপুর সদর, কেরানীগঞ্জ, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, শেরপুর নালিতাবাড়ি, কুমিল্লার বুড়িচং, ফেনী সদর, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম সদর, সীতাকুণ্ড, নরসিংদীর শিবগঞ্জ, সিলেট বিয়ানীবাজার, খুলনা রামপাল, সাতক্ষীরা সদর, চুয়াডাঙার দামুড়হুদা, দিনাজপুরের হাকিমপুর, কুড়িগ্রামের রৌমারী, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, সৈয়দপুর, শিবচর ও কালিহাতী উপজেলা।
সব ক্ষেত্রে নিরাপদ পানি ব্যবহার জনস্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম শর্ত। কিন্তু পরিবেশে রাসায়নিক দ্রব্য ও জীবাণুর কারণে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি এখন সবার জন্য প্রায় দুষ্প্রাপ্য। সেজন্য জনস্বাস্থ্যও মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। তাই সারাদেশের মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে ৫২টি নতুন পরীক্ষাগার স্থাপন করবে সরকার।
এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ‘পানির গুণগতমান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটিও একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। বর্তমানে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কুমিল্লা, খুলনা, ঝিনাইদহ, রংপুর, বগুড়া, সিলেট, টঙ্গী, বরিশাল, নোয়াখালীতে (১২টি) পানির পরীক্ষাগার রয়েছে।
বর্তমানে থাকা পরীক্ষাগার থেকে অনেক জেলার দূরত্ব বেশি হওয়ায় নিয়মিত নমুনা সংগ্রহ ও পরিবহনে জটিলতা দেখা যায়। সেজন্য অনেক সময় পানি পরীক্ষার সঠিক ফল পাওয়া যায় না। নতুন করে ৫২টি পানি পরীক্ষাগার স্থাপিত হলে সারাদেশের জনগোষ্ঠী এই সুফল পাবে। দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করার মাধ্যমে সেই পানির গুণগতমান সম্পর্কে জানা যাবে। ফলে সারাদেশের মানুষ বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা পাবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো: ‘কুড়িগ্রাম
(দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে
উন্নীতকরণ’ ‘ভুয়াপুর-তারাকান্দি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায়
উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; ‘৪-লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ৪ বছরের
জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ’ প্রকল্প।
‘নরসিংদী জেলা কারাগার নির্মাণ’, ‘মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং
কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্প; ও ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব
স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’
প্রকল্প; এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘কনভারশন অব ১৫০
মে. ও. সিলেট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট টু ২২৫ মে. ও. কম্বাইন্ড
সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ; স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।